1. bhashatvnews@gmail.com : বার্তা বিভাগ :
  2. editor@bhashatv.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
  3. bhashatvnews11@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
  4. shahjamal.press@gmail.com : বার্তা বিভাগ : বার্তা বিভাগ
কামারের দোকান যেন ‘মিনি অস্ত্র কারখানা’ - OnlineTV
সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০৯:০২ অপরাহ্ন

কামারের দোকান যেন ‘মিনি অস্ত্র কারখানা’

Reporter Name
  • আপডেট টাইম : শনিবার, ২৩ আগস্ট, ২০২৫
  • ১৯৮ বার পঠিত

টুটুল তালুকদার, গাজীপুর : গাজীপুরে সাংবাদিক আসাদুজ্জামান তুহিন হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ভয়ংকর এক চিত্র উঠে এসেছে। নগরজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কামারের দোকানগুলো যেন পরিণত হয়েছে মিনি অস্ত্র তৈরির গোপন কারখানায়। আর সবচেয়ে উদ্বেগ জনক বিষয় হলো, এসব দোকান থেকে প্রাণঘাতী দেশীয় অস্ত্র সংগ্রহ করছে কোপা মিজান সেভেন গ্যাং গ্রুপের সদস্যরা ও অন্যান্য অপরাধীরা।

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে, রাজধানীর চকবাজার থেকে শুরু করে মফস্বলের কামারপট্টি—দেশজুড়ে বিস্তৃত একটি অবৈধ অস্ত্র তৈরির ‘সাপ্লাই চেইন’ গড়ে উঠেছে। মাত্র কয়েকশ টাকা আর কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই এসব দোকানে তৈরি হয়ে যাচ্ছে খুনের জন্য প্রস্তুত রামদা, চাপাতি, চাইনিজ কুড়াল কিংবা চাকু- ছুরি।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, ভয়ংকর সেভেন গ্যাংয়ের নেতা কোপা মিজান ও তার সহযোগীদের ব্যবহৃত তিন শতাধিক দেশীয় অস্ত্রের উৎসও এ ধরনের দোকানগুলো হতে পারে। ইতোমধ্যেই বিভিন্ন অভিযানে উদ্ধার হওয়া দেশীয় অস্ত্রগুলোর উৎস খতিয়ে দেখার দাবি জোরালো হচ্ছে।

গাজীপুর সিটির কোনাবাড়ির এক কামার নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, প্রতিদিন ৩-৪টা চাপাতি বানাই। কিশোররাও এসে বলে ভাই, একটুর মধ্যে দিয়া দেন, বড় ভাইয়ের দরকার।

তিনি আরও জানান, গ্রাম্য মেলা কিংবা উৎসবের মৌসুমে এসব অস্ত্রের চাহিদা হঠাৎ করেই বেড়ে যায়। সেই সময় কামারের দোকানগুলোতেই তৈরি হয় বহু প্রাণঘাতী অস্ত্র, যা আবার মেলায় বিক্রি হয় একদম প্রকাশ্যে।

চান্দনা চৌরাস্তা এলাকার আরেক কামার জানান, অনেক নেশাগ্রস্ত প্রকৃতির লোকজন আসে, কসাইখানার কথা বলে অর্ডার দেয়। কেউ বলে নাটকের জন্য নিচ্ছে। কিন্তু আমরাও জানি, এই নাটকে অনেক সময় রক্ত ঝরে।

অনুসন্ধান বলছে, সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত চাপাতি ও চাইনিজ কুড়ালও স্থানীয় কোনো কামারের দোকানে তৈরি হয়েছিল কীনা দেখতে হবে। স্থানীয় সূত্র বলছে, কোপা মিজানের সেভেন গ্যাং নগরের এসব দোকান থেকেই নিয়মিত অস্ত্র সংগ্রহ করতো তদন্ত করলে সংশ্লিষ্টতা ধরা পড়বে। পাশাপাশি পুরান ঢাকার চকবাজারেও তাদের রুট রয়েছে।

চকবাজার এলাকার কিছু দোকান নজরদারিতে এলেও, দেশের বিভিন্ন মফস্বলের অসংখ্য কামারপট্টি এখনো প্রশাসনের পর্যবেক্ষণের বাইরে রয়ে গেছে।অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক গোলাম মোস্তফা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, রাস্তায় কথা কাটাকাটি হলেই এখনকার ছেলেরা রামদা নিয়ে আসে। সমাজটা কোথায় যাচ্ছে?

স্থানীয় নারী উদ্যোক্তা পারভীন বলেন,আমার ছেলের স্কুলফ্রেন্ডরাই বলে,রামদা এখন খেলনার মতো!

বিশ্লেষকদের মতে, কিশোর গ্যাংয়ের হাতে অস্ত্রের এমন সহজলভ্যতা একটি নতুন ‘সামাজিক সন্ত্রাস’ তৈরি করছে। যদি এখনই এই চেইন ভাঙা না যায়, তবে ভবিষ্যতে কিশোরদেরই দেখা যাবে খুনিদের আসনে।

গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (উত্তর অপরাধ) রবিউল হাসান বলেন, আমরা জানতে পেরেছি, অনেক কিশোর অনলাইন থেকেও অস্ত্র সংগ্রহ করছে। স্থানীয় কামারের দোকানগুলো থেকেও নিচ্ছে কিনা, সেটাও আমরা খতিয়ে দেখছি।

সচেতন নাগরিকরা প্রশ্ন তুলেছেন—এই ভয়াবহতা কি প্রশাসনের চোখে পড়ে না? তাদের মতে, নিয়মিত নজরদারি, কঠোর লাইসেন্স ব্যবস্থা এবং আধুনিক মনিটরিং না থাকলে সাংবাদিক তুহিন হত্যাকাণ্ডের মতো আরও অনেক ঘটনা ঘটতেই থাকবে। শুধু গ্যাং নয়, এবার হত্যাকারীর নতুন প্রজন্ম উঠে আসছে ভাড়াটিয়া খুনি স্কুলফেরত কিশোরদের মধ্য থেকেই।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর
অনলাইন নিউজ টিভি ভাষাটিভি একটি অলাভজনক সামাজিক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন "ভাষা আন্দোলন পরিষদ"এর অঙ্গ প্রতিষ্ঠান।
Design By Raytahost